Ticker

6/recent/ticker-posts

লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম কি?

লিনাক্স কি? ( What is Linux in Bengali ) 

লিনাক্স কে কার্নেল ও অপারেটিং সিস্টেম দুই বলা যায়। কার্নেল হল অপারেটিং সিস্টেমের একটি কোর পার্ট যা হার্ডওয়ার ম্যানেজমেন্টের কাজ করে থাকে। Ken Thompson ও Dennis Ritchie ইউনিক্স অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করার পর, University of Helsinki এর একজন স্টুডেন্ট Linus Torvalds তার কলেজের লাস্ট ইয়ার প্রোজেক্ট এর জন্য একটি অপারেটিং সিস্টেম বানাতে চেয়েছিল, তাই তিনি ইউনিক্স নিয়ে অনেক কাজ করেন। এরপর তিনি ইউনিক্স এর মতই একটি কার্নেল তৈরি করেন যার নাম দেন লিনাক্স। এবং এই প্রজেক্টটি তিনি ওপেন সোর্স রাখেন ও ইন্টারনেটে ফ্রি তে আপলোড করে দেন। যার ফলে যে কেউ লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করে একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে পারবেন। এরপর 1991 থেকে 1994 এরমধ্যে Linus Torvalds লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করেন GNU OS ও লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করে। এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমটিও ছিল ওপেন সোর্স ও ফ্রী। তাই আমরা বলতে পারি লিনাক্স হল একটি কার্নেল যা ব্যবহার করে তৈরি করা অপারেটিং সিস্টেম গুলিকে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম বলা হয়। যেমন - Red Hat Linux, Ubuntu Linux, Kali Linux প্রভৃতি। 

Linux Bangla Tutorial

Windows ও Mac OS কম্পিউটারে ইনস্টল করার জন্য সেই সব কোম্পানিদের মোটা অংকের টাকা পে করতে হতো এবং হয়, কিন্তু লিনাক্স সম্পূর্ণ ফ্রি ও ওপেনসোর্স হওয়ায় বিভিন্ন এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন থেকে শুরু করে বিজ্ঞানীরা এই লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা শুরু করে।

এছাড়াও সারা বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি ও ইনস্টিটিউশন গুলি তাদের নিজেদের মতো লিনাক্সের নতুন নতুন ভার্সন তৈরি করা শুরু করে। যেগুলোকে লিনাক্সে ডিস্ট্রিবিউশন বলে যেমন - Red Hat Linux, Ubuntu Linux, Kali Linux, Debian Linux, Fedora Linux, CentOS, Arch Linux প্রভৃতি।


গুগল ও লিনাক্স 

এছাড়াও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমটিও লিনাক্স কার্নেল কে ব্যবহার করে বানানো। যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের এবাউট সেকশনে গেলে লিনাক্স কার্নেল সম্বন্ধে জানা যায়। এছাড়াও জানা যায় Google তাদের কোম্পানির কিছু কাজের জন্য লিনাক্সের একটি ভার্সন তৈরি করেছে সেটি হল Goobuntu Linux যা গুগলের 10000 জনেরও বেশি employee ব্যবহার করে থাকেন।


লিনাক্স কেন ব্যবহার করবো এবং লিনাক্স এর সুবিধা কি কি?

  • লিনাক্সের বেশিরভাগ ডিস্ট্রিবিউশন গুলি অর্থাৎ ভার্সন গুলি ফ্রি তাই লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম কোন কম্পিউটারে ইনস্টল করার জন্য আলাদা কোন চার্জ পে করতে হয় না।

  • লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম গুলিতে রয়েছে উচ্চমানের সিকিউরিটি। তাই  ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার এর জন্য আলাদা কোনো অ্যান্টিভাইরাস বা অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার এর প্রয়োজন পরে না। এমনকি অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টি ম্যালওয়ার লিনাক্সের জন্য পাওয়া যায়না।

  • লিনাক্স একটি স্টেবল ও শক্তিশালী অপারেটিং সিস্টেম। এটি খুব দ্রুত কাজ করে এবং সহজে crash করে না। লিনাক্সে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের মত ইনস্টলেশনের কয়েক মাস বাদে সিস্টেম স্লো হয়ে যায় না। যে কারণে সার্ভার কম্পিউটার গুলিতে লিনাক্স সার্ভার অপারেটিং সিস্টেম খুব বেশি ব্যবহার হয়।

  • যেসব কম্পিউটারে specification এবং configuration খুবই নিম্নমানের সেইসব কম্পিউটারেও লিনাক্সের বেশকিছু ডিস্ট্রিবিউশন খুব ভালোভাবে চলে। উইন্ডোজের মত ল্যাগ ও ক্র্যাশ করে না।

  • লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ফ্রী এর সাথে ওপেন সোর্স হওয়ায় অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে জানা দক্ষ কোন প্রোগ্রামার বিভিন্ন প্রবলেম ফিক্স করা ও নিজের মত ফিচার অ্যাড করার মত কাজ করা সম্ভব।


লিনাক্স এর প্রকারভেদ ( Type of Linux in Bengali )

লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশন গুলি সার্ভার এডিশন ও ডেস্কটপ ভার্শন এই দুই ধরনের হয়ে থাকে। সার্ভার এডিশন ব্যবহার হয় সার্ভার কম্পিউটার গুলির জন্য। এবং ডেস্কটপ ভার্সন পার্সোনাল এবং অফিসিয়াল কাজে ব্যবহার হয়।


Root / রুট

Root হল কোন লিনাক্সের highest level permission আবার root user কে উইন্ডোজের ভাষায় administrator বলা যেতে পারে। লিনাক্সে একজন Root User যা খুশি করতে পারে এমনকি সিস্টেম ফাইল নিয়েও কাজ করতে পারে।


লিনাক্সের কিছু বেসিক কমান্ড ( Linux Command in Bengali )

লিনাক্সে GUI থাকলেও সব কাজই টারমিনালে করা সম্ভব, এমনকি অনেক এমন টাস্ক আছে যা শুধু টারমিনালে কমান্ড দিয়ে করতে হয়। আমরা এখন জানব লিনাক্সের বেসিক কিছু টাস্ক নিয়ে। তার আগে বলি টারমিনাল ওপেন করার শর্টকার্ট হল ctrl + alt + t অথবা অ্যাপ মেনু থেকে সার্চ করেও ওপেন করতে পারেন। 


  • pwd - যার পুরো নাম print working directory এর সাহায্যে টারমিনালে কোন ডাইরেক্টরিতে আছি জানতে ও স্ক্রিনে প্রিন্ট করতে ব্যবহার হয়।

  • cd - যার পুরো নাম change directory এর সাহায্যে directory nevigate করতে ব্যবহার করা হয়।

  • ls - এর সাহায্যে directory তে থাকা ফোল্ডার ও ফাইল সমগ্রকে স্ক্রিনে প্রিন্ট করা হয়।

  • cp - এর সাহায্যে কোন ফাইল ও ডাইরেক্টরি কপি করা হয়।

  • mv - এর সাহায্যে কোন ফাইল বা ডাইরেক্টরি বা ফোল্ডার move অথবা rename করা হয়।

  • rm - এর সাহায্যে কোন ফাইল ডিলিট করা হয়।

  • rmdir - এর সাহায্যে কোন ডাইরেক্টরি বা ফোল্ডার ডিলিট করা হয়।

  • mkdir - এর সাহায্যে কোন ডাইরেক্টরি বা ফোল্ডার তৈরি করা হয়।

  • touch - এর সাহায্যে কোন ফাইল তৈরি করা হয়।

  • whoami - লগ ইন হওয়া ইউজার কে জানার জন্য ব্যবহার হয়।

লিনাক্স ও উইন্ডোজ এর পার্থক্য


লিনাক্স উইন্ডোজ
লিনাক্স একটি ফ্রি ও ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম।
উইন্ডোজ একটি কমার্শিয়াল ও পেইড অপারেটিং সিস্টেম। 
লিনাক্স উইন্ডোজের থেকে দ্রত কাজ করে। 
উইন্ডোজ লিনাক্সের মতো দ্রত কাজ করে না।
লিনাক্স উইন্ডোজের চেয়ে অনেক বেশী স্টেবল।
উইন্ডোজ লিনাক্সের মতো স্টেবল না। 
লিনাক্স গেমিং এর জন্য তৈরি না তাই লিনাক্সে গেমিং করা সম্ভব না। 
কিন্তু উইন্ডোজ গেমিং এর জন্য সবচেয়ে ভালো প্লাটফর্ম। 
লিনাক্সের সিকিউরিটি খুবই উচ্চমানের তাই কোন অ্যান্টিভাইরাসের  দরকার পরে না। 
উইন্ডোজের সিকিউরিটি উচ্চমানের না হওয়ায় অ্যান্টিভাইরাসের দরকার পরে।
লিনাক্স ইউজার তুলনামূলক অনেক কম। উইন্ডোজ ইউজার তুলনামূলক অনেক বেশী।

সবশেষে এটাই বলার যে লিনাক্স ফ্রি ও ওপেন সোর্স প্রজেক্ট হওয়ায় প্রতিনিয়ত সারা বিশ্বের প্রোগ্রামাররা এর উপর কাজ করে চলেছেন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবিশেষ লিনাক্স কার্নেল ব্যবহার করে লিনাক্সের বিভিন্ন ভার্সন অর্থাৎ ডিস্ট্রিবিউশন তৈরি করে চলেছে। এবং লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের জনক Linus Torvalds কে অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন একটি প্রজেক্ট কে ফ্রি ও ওপেনসোর্স রাখার জন্য।

Linux ki পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন এবং কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ